জুলাই মাসের সনদের দাবিতে ৩ আগস্ট মাঠে নামবে এনসিপি: নাহিদ
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম ঘোষণা করেছেন যে নতুন সংবিধানে ‘জুলাই সনদ’ অন্তর্ভুক্ত না করা হলে তারা ৩ আগস্ট থেকে আবার ঢাকার রাস্তায় নামবে। শুক্রবার (৪ জুলাই) সন্ধ্যা ৬টায় দিনাজপুর ইনস্টিটিউট মাঠে ‘জুলাই পদযাত্রা’ কর্মসূচির চতুর্থ দিনের ভাষণে তিনি এই ঘোষণা দেন। নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘আমরা দেখতে পাচ্ছি যে জুলাই সনদ নিয়ে একটি অজুহাত তৈরি করা হচ্ছে। বলা হচ্ছে যে জুলাই ঘোষণার কোনও সাংবিধানিক স্বীকৃতি থাকবে না। জুলাই সনদ সংবিধানে যুক্ত করতে হবে। জুলাই বিদ্রোহে অংশগ্রহণকারীদের, যারা আহত ও শহীদ হয়েছেন, তাদের মর্যাদা ও নিরাপত্তা নতুন বাংলাদেশের নতুন সংবিধানে উল্লেখ করতে হবে। ইনশাআল্লাহ, জাতীয় নাগরিক পার্টি ৩ আগস্ট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে সমবেত হবে এবং অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছ থেকে জুলাই ঘোষণাপত্রটি গ্রহণ করা হবে।’ তিনি বলেন, ‘জুলাই বিদ্রোহের এক বছর পূর্ণ হতে চলেছে। আমরা আশা করেছিলাম যে এই এক বছরে দেশ বদলে যাবে। কিন্তু সেই স্বপ্ন এখনও পূরণ হয়নি। ফ্যাসিস্ট সরকারের পতনের পরও নতুন বাংলাদেশ গড়ে তোলা সম্ভব হয়নি। আমরা দেখতে পাচ্ছি যে পূর্ববর্তী কর্তৃত্ববাদী কাঠামো এখনও বহাল রয়েছে। লুটেরা এবং দুর্নীতিবাজদের রক্ষা করা হচ্ছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের ছাত্র এবং জনগণ একটি নতুন কাঠামো, একটি নতুন রাষ্ট্র, একটি নতুন দেশের জন্য রাস্তায় নেমেছিল। আমরা কেবল একটি দলকে সরিয়ে অন্য একটি দল প্রতিষ্ঠা করার জন্য প্রতিবাদ করিনি। গণঅভ্যুত্থানের অসমাপ্ত কাজ সম্পন্ন করার জন্য আমরা মাঠে নেমেছিলাম। আমাদের লক্ষ্য ফ্যাসিস্ট কাঠামোর অবসান এবং একটি গণতান্ত্রিক ও বৈষম্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তোলা।’ নাহিদ ইসলাম দিনাজপুরের জনগণকে বলেন, ‘এই জেলার মানুষ ইতিহাসের সাক্ষী। নীল বিদ্রোহ থেকে শুরু করে ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থান পর্যন্ত দিনাজপুরের মানুষ অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াই করেছে। ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি হানাদারদের বিরুদ্ধেও এই এলাকার মানুষ অস্ত্র তুলেছিল।’ তিনি আরও বলেন, ‘ধান-ধানের জেলা দিনাজপুরের কৃষকরা ন্যায্য মূল্য পায় না। এখানকার উৎপাদিত চাল রাজধানীসহ বিভিন্ন জেলায় পাঠানো হয়। দিনাজপুর যে বৈষম্য উৎপাদন করবে আর ঢাকা যে বৈষম্য ভোগ করবে, তা আমরা চাই না। আঞ্চলিক বৈষম্য চিরতরে দূরে সরিয়ে রাখতে হবে।’ পথ সভায় বক্তব্য রাখার আগে, এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম দিনাজপুর বড়মাঠ থেকে ইনস্টিটিউট গ্রাউন্ডে প্রায় এক কিলোমিটার হেঁটে একটি গণসমাবেশ করেন। এসময় এনসিপির উত্তরাঞ্চলের প্রধান সংগঠক সরজিস আলম, দক্ষিণাঞ্চলের প্রধান সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ, ড. আব্দুল আহাদ, সদস্য সচিব আখতার হোসেন এবং ড. তাসনিম জারা তার সাথে ছিলেন।