• বাংলা
  • English
  • জাতীয়

    তিস্তার পানি বিপৎসীমার উপর: উত্তরাঞ্চলে পানিবন্দি অর্ধলাখ পরিবার

    ভারি বর্ষণ ও উজান থেকে আসা পাহাড়ি ঢলে তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে তিস্তা নদীর তীরবর্তী হাজার হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। বিশুদ্ধ পানি ও খাবারের সংকট দেখা দিয়েছে।

    রোববার সকাল ৬টায় লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার দোয়ানীতে দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারেজের ডালিয়া পয়েন্টে ৫২ দশমিক ১৭ মিটার পানি প্রবাহ রেকর্ড করা হয়েছে। যা বিপদ অঞ্চলের ২ সেমি উপরে প্রবাহিত হয় (স্বাভাবিক ৫২.১৫ মিটার)। এর আগে গতকাল শনিবার বিকেলে উপকূল রেখা ঘেঁষে পানি প্রবাহিত হচ্ছিল। ফলে নদী তীরবর্তী এলাকা প্লাবিত হয়েছে। তিস্তার তীরবর্তী কয়েক লাখ পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।

    বন্যা সতর্কীকরণ কেন্দ্র ও চরবাসী জানিয়েছে, ভারতের সিকিম থেকে তিস্তা নদী বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। প্রতিবেশী দেশ ভারত তিস্তার পানি বাংলাদেশের অংশের উজানে বাঁধ নির্মাণ করে নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করছে। বর্ষাকালে গজলডোবা গেট খুলে বাংলাদেশের দিকে অতিরিক্ত পানি ছেড়ে দেওয়া হয়। একইভাবে ভারত সরকার শুষ্ক মৌসুমে গেট বন্ধ করে বাংলাদেশকে মরুভূমিতে পরিণত করে একচেটিয়াভাবে তিস্তার পানি ব্যবহার করছে।

    বর্ষা মৌসুম শুরু হওয়ার সাথে সাথে উজানে ভারতে ভারী বৃষ্টিপাত হচ্ছে। ফলে বাংলাদেশ অংশে অতিরিক্ত পানি ছাড়া হচ্ছে। এই উজানের প্রবাহে তিস্তার পানি বাড়ছে ব্যাপকভাবে। সেই সঙ্গে যোগ হয়েছে কয়েক দিনের টানা ভারি বর্ষণ। ফলে তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমা স্পর্শ করছে।

    প্রতিদিনের বৃষ্টিপাত ও উজান থেকে প্রবাহিত পানি বৃদ্ধির ফলে বিলে পানি ছাড়াও তিস্তাসহ সব নদীতে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। নিচু এলাকা প্লাবিত হওয়ায় ঘরবাড়ি ও রাস্তাঘাট ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে। সেই সাথে ফসলি জমিতে পানি উঠে যাওয়ায় শীতের আগাম সবজি ও বীজসহ বিভিন্ন ফসল নষ্ট হচ্ছে।

    সরেজমিনে দেখা গেছে, তিস্তার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় জেলার দহগ্রাম, পাটগ্রাম, হাতীবান্ধার গড্ডিমারী, দোয়ানী, সানিয়াজান ইউনিয়নের নিজ শেখ সুন্দর, সিংগামারী ইউনিয়নের ধুবনী, তিস্তা নদীর তীরবর্তী নিচু এলাকায় পানি প্রবেশ করছে। সিন্দুরনা, পাটিকাপাড়া, দৌয়াবাড়ি ইউনিয়ন।

    আবহাওয়া অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, শনিবার পর্যন্ত রংপুর বিভাগ ও তৎসংলগ্ন ভূমিতে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের প্রবণতা রয়েছে। ফলে আগামী দুই দিন তিস্তা নদীর পানির উচ্চতা দ্রুত বৃদ্ধি পেতে পারে এবং আগামী একদিন পানির উচ্চতা স্থিতিশীল থাকতে পারে। তিস্তা নদীর পানি আগামী দুই দিন পর্যন্ত সমতল সতর্ক সীমায় প্রবাহিত হতে পারে। নদী তীরবর্তী তৃণভূমি ও নিচু এলাকা প্লাবিত হতে পারে।