জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা টানা দ্বিতীয় দিনের মতো রাস্তায় বিক্ষোভ করছে।
বুধবার গভীর রাতেও তারা রাস্তা ছাড়েনি। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা ঘোষণা করেছে যে তাদের তিন দফা দাবি নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত তারা শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ চালিয়ে যাবে। সরেজমিনে দেখা গেছে যে কাকরাইলে গভীর রাতেও শিক্ষার্থীরা রাস্তায় বিক্ষোভ করছে। অনেকে রাস্তায় শুয়ে রাত কাটিয়েছে, আবার অনেকে রাস্তায় ঘুমিয়েছে। গভীর রাতেও তাদের মাঝে মাঝে স্লোগান দিতে দেখা গেছে। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, আবাসন সংকট সমাধানের জন্য অতীতে বারবার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি। এবার, এটি প্রতিশ্রুতি নয়; তিন দফা দাবির পূর্ণ বাস্তবায়ন না করে তারা ক্যাম্পাসে ফিরবে না। এর আগে, বুধবার সকাল ১১ টায়, কয়েকশ শিক্ষার্থী ‘লং মার্চ টু যমুনা’ কর্মসূচি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় যমুনার দিকে মিছিল করে। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা পথে বেশ কয়েকটি পুলিশ ব্যারিকেড ভেঙে এগিয়ে যায়। তবে, কাকরাইল মোড়ে পৌঁছানোর পর তারা পুলিশের বাধার সম্মুখীন হয়। এ সময় বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীদের সাথে পুলিশের ইটপাটকেল ছোঁড়া, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এক পর্যায়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী লাঠিচার্জ, স্টান গ্রেনেড এবং কাঁদানে গ্যাস ছুঁড়ে শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এতে শিক্ষক, শিক্ষার্থী এবং সাংবাদিকসহ কমপক্ষে ৩৮ জন আহত হন।
জানা গেছে, শিক্ষার্থীদের দাবি আদায়ের জন্য গত সোমবার ক্যাম্পাসে ছাত্র-শিক্ষক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধি এবং শিক্ষক সমিতির সদস্যরা বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) কর্মকর্তাদের সাথে বৈঠকে অংশ নেন। বৈঠকে জবি’র বাজেট বৃদ্ধি এবং আবাসন সংকট সমাধানের বিষয়ে আলোচনা হলেও, শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, তাদের দাবি পূরণ হয়নি।
তাদের মতে, বিশ্ববিদ্যালয় এবং শিক্ষার্থীরা তাদের নিজ নিজ দাবি যথাযথভাবে উপস্থাপন করলেও, ইউজিসি বরাবরের মতোই দায়িত্বের আশ্বাস দিয়ে তাদের ফিরিয়ে দেয়। সেখান থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল সংগঠনের প্রতিনিধিরা একসাথে আলোচনা করে ‘যমুনা পর্যন্ত লং মার্চ’ ঘোষণা করেন।
এদিকে, তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মাহফুজ আলম বলেন, প্রশাসনের সাথে আলোচনা করে শিগগিরই শিক্ষার্থীদের দাবি বাস্তবায়নের ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি বলেন, প্রধান উপদেষ্টা শীঘ্রই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সাথে একটি বৈঠক করবেন। বৈঠকে শিক্ষার্থীদের তিন দফা দাবি সমাধানের চেষ্টা করা হবে। সরকার যেকোনো যুক্তিসঙ্গত আন্দোলন শুনবে।