বৃহত্তম বন্দি বিনিময়ের কয়েক ঘন্টা পরে কিয়েভে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় রাশিয়া
রয়টার্সের একটি প্রতিবেদনের উদ্ধৃতি দিয়ে কিয়েভের মেয়র জানিয়েছেন, যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে বৃহত্তম বন্দি বিনিময়ের কয়েক ঘন্টা পরে রাশিয়া কিয়েভে ড্রোন এবং ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়।
মেয়র ভিটালি ক্লিটসকো বলেছেন যে শনিবার (২৪ মে) ভোরে রাশিয়ার ড্রোন এবং ক্ষেপণাস্ত্র হামলা শহরের বেশ কয়েকটি জেলায় ধ্বংসাবশেষ ছড়িয়ে ছিটিয়েছিল। এই ঘটনায় কমপক্ষে আটজন আহত হয়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা রয়টার্সকে জানিয়েছেন যে তারা কিয়েভের উপর দিয়ে বেশ কয়েকটি ড্রোন উড়তে দেখেছেন এবং বিস্ফোরণের শব্দ শুনতে পেয়েছেন।
মেয়র জানিয়েছেন যে দুই বাসিন্দাকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। বিমান প্রতিরক্ষা ইউনিট সক্রিয় ছিল।
এদিকে, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় বন্দি বিনিময় শুক্রবার (২৩ মে) অনুষ্ঠিত হয়েছে। উভয় পক্ষ ৩৯০ জন করে সামরিক এবং বেসামরিক বন্দীকে মুক্তি দিয়েছে। ভবিষ্যতে আরও বন্দীকে মুক্তি দেওয়ার ঘোষণাও দেওয়া হয়েছে।
তুরস্কে রাশিয়া, ইউক্রেন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে ত্রিপক্ষীয় বৈঠকের পর যুদ্ধবিরতি আলোচনায় অগ্রগতি হয়েছে। এই বৈঠকে গৃহীত সিদ্ধান্তের ফলে, উভয় দেশ শুক্রবার ২৭০ জন সামরিক কর্মী এবং ১২০ জন বেসামরিক নাগরিককে মুক্তি দিয়েছে। বন্দি বিনিময় চুক্তির আওতায় দুই দেশ ১,০০০ বন্দিকে মুক্তি দেওয়ার পরিকল্পনা করছে।
ইউক্রেনের রাষ্ট্রপতি ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন যে কিয়েভের লক্ষ্য হল রাশিয়ায় বন্দী প্রতিটি ইউক্রেনীয় সৈন্য এবং বেসামরিক নাগরিককে মুক্তি দেওয়া। জেলেনস্কি রাশিয়ার উপর চাপ বাড়ানোর জন্য বিশ্বকে আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, “রাশিয়ার উপর চাপ বাড়ানোর এটাই সঠিক সময়। এটি কেবল ফলাফলই আনবে না, বরং আমাদের যা পাওয়া উচিত তা আমরা পাব। যখন আমাদের যুদ্ধবিরতির প্রয়োজন হয়, তখন রাশিয়ানরা তথাকথিত ‘স্মারকলিপি’ প্রস্তুত করতে এক সপ্তাহ ব্যয় করেছে। এটি অবশ্যই একটি উপহাস।”
রাশিয়া বলেছে যে বন্দি বিনিময় সম্পন্ন হওয়ার পরে তারা ইউক্রেনের কাছে একটি খসড়া শান্তি চুক্তি উপস্থাপন করবে। রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ বলেছেন যে তারা দীর্ঘমেয়াদী, টেকসই শান্তি চুক্তির কাঠামো তৈরি করতে প্রস্তুত।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বিনিময়কে স্বাগত জানিয়ে বলেছেন যে এটি বড় কিছুর সূচনা হতে পারে। কিন্তু ক্রেমলিন এখনও যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে সম্মত হয়নি। ল্যাভরভ ভ্যাটিকানকে শান্তি আলোচনার সম্ভাব্য স্থান হিসেবে বিবেচনা করার ধারণাও প্রত্যাখ্যান করেছেন।