বাংলাদেশ ভারত থেকে জাহাজ ক্রয় চুক্তি বাতিল করেছে
বাংলাদেশ ভারতের রাষ্ট্রায়ত্ত জাহাজ নির্মাণ কোম্পানির সাথে জাহাজ কেনার জন্য ২১ মিলিয়ন ডলারের চুক্তি বাতিল করেছে। শুক্রবার (২৩ মে) বেশ কিছু ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এই চুক্তি বাতিলের খবর প্রকাশ করেছে।
হিন্দুস্তান টাইমসের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের পতনের এক মাস আগে, গত বছরের জুলাই মাসে কলকাতা-ভিত্তিক জাহাজ নির্মাণ কোম্পানি গার্ডেন রিচ শিপবিল্ডার্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেড (জিআরএসই) এবং বাংলাদেশ নৌবাহিনীর মধ্যে একটি উন্নত সমুদ্রগামী টাগবোট তৈরির জন্য ২১ মিলিয়ন ডলারের (প্রায় ১৮০ কোটি টাকা) চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
গত বছরের জুনে শেখ হাসিনার ভারত সফরের সময় ভারত ও বাংলাদেশ দীর্ঘমেয়াদী প্রতিরক্ষা সহযোগিতা জোরদার করার বিষয়ে সম্মত হওয়ার পর এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। বুধবার (২১ মে) ন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জ অফ ইন্ডিয়া লিমিটেডে দাখিল করা একটি নথিতে জিআরএসই বলেছে, “আমরা আপনাকে জানাতে চাই যে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার এই ক্রয় আদেশ বাতিল করেছে।”
টাইমস অফ ইন্ডিয়া সহ বেশ কয়েকটি ভারতীয় সংবাদমাধ্যম শেয়ার বাজারের নথির উদ্ধৃতি দিয়ে এই বিষয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। বিবিসি বাংলাও এই বিষয়ে তাদের প্রতিবেদনে জিআরএসই-এর চিঠি উদ্ধৃত করেছে।
হিন্দুস্তান টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে জিআরএসই-এর সাথে ৮০০ টনের সমুদ্রগামী টাগবোটের চুক্তিটি প্রতিরক্ষা ক্রয়ের জন্য ভারতের ৫০০ মিলিয়ন ডলারের ঋণের আওতায় প্রথম বড় চুক্তি।
শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে “ঠান্ডা” সম্পর্ক রয়েছে। গত সপ্তাহে (১৭ মে), ভারত স্থলবন্দর দিয়ে পোশাক সহ বেশ কয়েকটি বাংলাদেশি পণ্য আমদানি নিষিদ্ধ করার ঘোষণা দিয়েছে। এর ফলে ৭৭০ মিলিয়ন ডলার বা বাংলাদেশের বার্ষিক রপ্তানির ৭৭০ মিলিয়ন ডলার ক্ষতি হবে বলে আশা করা হচ্ছে, যা দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের প্রায় ৪২ শতাংশ।
ভারত আমদানির উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের এক সপ্তাহ পর বাংলাদেশ টাগবোট ক্রয় চুক্তি বাতিল করেছে। টাইমস অফ ইন্ডিয়া এটিকে “দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের জন্য একটি বড় আঘাত” বলে অভিহিত করেছে। বাংলাদেশ নৌবাহিনী বা প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এখনও চুক্তিটি বাতিল করার কারণ সম্পর্কে কোনও বিবৃতি দেয়নি। নাম প্রকাশ না করার শর্তে বাংলাদেশ সরকারের একজন ঊর্ধ্বতন সূত্র বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছেন যে তারাও আদেশ বাতিলের বিষয়টি সম্পর্কে অবগত ছিলেন কিন্তু কেন বা কখন এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল তা বলতে পারছেন না। বাংলাদেশ কেন চুক্তি বাতিল করেছে সে সম্পর্কেও ভারতীয় কোম্পানিটি কোনও তথ্য দেয়নি।